উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তার দল ও পরিবার। এ বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের আবেদনের বিষয়টি আইনগতভাবে খতিয়ে দেখছে সরকার। তবে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেলেও খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়ন করতে হবে।
জানা গেছে, এর আগে গত ৬ মে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। তবে তখন তা নবায়ন করেনি পাসপোর্ট অফিস। এমনকি ওই আবেদন বাতিল করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তাই তাকে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে নতুন করে আবেদন করতে হবে। যা এখনও করা হয়নি।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাঁর পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই। তবে সরকার নির্বাহী আদেশে পাসপোর্ট করে দিতে পারে।
পাসপোর্টের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার বলেন, ‘ওই সময় আমাদের বলা হয়েছিল, ম্যাডামের পাসপোর্ট হয়ে গেছে। এসে নিয়ে যান। যাওয়ার পর বলে, একটু সমস্যা আছে। পরে নিতে হবে। এরপর আর কোনো তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’
সূত্রমতে, গত ৬ মে খালেদা জিয়ার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নবায়নের আবেদন করা হয়। এখন দেওয়া হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। তাই নবায়ন করতে হলে খালেদা জিয়াকেও ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে হবে। এমআরপি পাসপোর্ট হলে নতুন করে ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ না নিয়েই নবায়নের সুযোগ ছিল। ই-পাসপোর্টের বেলায় নতুন করে ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের ছবি নিতে হয়।
তবে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, সারা দেশেই এখন ই-পাসপোর্ট করা হচ্ছে। তবে বিশেষ প্রয়োজনে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়ার সুযোগ আছে।
খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়ন সম্পর্কে ইমিগ্রেশান ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত (৫ ডিসেম্বর) নতুন কোনো আবেদন আমরা পাইনি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ মে খালেদা জিয়ার নামে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১৭ মে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়। এমআরপি পাসপোর্টে তাঁর জন্মস্থান লেখা রয়েছে দিনাজপুর।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘২০১৪ সালে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলেন ম্যাডাম। তিনি সেখানে গিয়ে আঙুলের ছাপ দেওয়া, ছবি তোলাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিলেন।’
এদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধানী খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ হয়েছে বলে চিকিৎকরা জানিয়েছেন। তবে আবারও রক্তক্ষরণের আশঙ্কা করছেন তারা। এজন্য দ্রুত তাকে বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎকরা।