পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। হজপালনকারীরা এহরামের কাপড় পরে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই মিনায় আসা শুরু করেন। প্রায় সব হজযাত্রী এখন মিনার তাবুতে অবস্থান করছেন। সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনি। আজ সারাদিন মিনার তাবুতে নামাজ ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাবেন হজপালনকারীরা। কাল শুক্রবার আরাফাত ময়দানে অবস্থানের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন হাজীরা।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর শুধু সৌদিতে অবস্থানরত সীমিত সংখ্যক মুসলিম পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পান। সে সময় স্বাস্থ্যবিধি পালনসহ নানা বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে এবার অনেকটা মুক্ত অবস্থায় পালিত হচ্ছে হজ। তাই হজযাত্রীদের মধ্যে অন্যরকম এক আবেগ কাজ করছে। তারা মুখে মাস্ক ছাড়াই হজ করতে পারছেন। করোনা ভাইরাসের অনুমোদিত টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন- এমন ১০ লাখ হজযাত্রী হজ পালন করছেন। এর মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার হজযাত্রী বিদেশি। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক। বাংলাদেশ থেকে এবার ৬০ হাজার ব্যক্তি হজের সুযোগ পেয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে যাওয়া এসব হজযাত্রী বুধবার সমবেত হন কাবা শরীফে। সেখানে পবিত্র কাবাকে তাওয়াফের মাধ্যমে তারা এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছেন।
তারপর গত রাত থেকেই তারা মিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। অনেকে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছেন। বাকিরা আজ সেখানে সমবেত হবেন। পবিত্র মিনায় নিজ নিজ তাঁবুতে অবস্থান করে সারাদিন রাত আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। এরপর শুক্রবার ফজরের নামাজ আদায় করে তারা রওনা দেবেন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে।
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা চলে ৫ দিন ধরে। তার মধ্যে আরাফাতের দিবসকে ধরা হয় মূল হজ হিসেবে। মিনা থেকে এদিন ভোর থেকেই হজযাত্রীরা লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। তাদের সমস্বরে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের আকাশ বাতাস। ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। দুপুরে হজের খুৎবা শুনবেন। তারপর এক আযানে হবে জুমা ও আসরের নামাজ। সূর্যাস্তের পর হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে যাত্রা করবেন মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে আবার তারা এক আযানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ।
তারপর পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য। এদিন রাতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন তারা। তারপর শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের পর পাথর নিক্ষেপ করবেন হজযাত্রীরা। এরপর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করবেন। কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করবেন। এহরাম খুলে পরবেন সাধারণ পোশাক। আবার কাবাঘর তাওয়াফ করবেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার চক্কর দেবেন। এরপর আবার ফিরে যাবেন মিনায়।