করোনাকালের দুই বছর পর ফের ইফতারের সেই দৃশ্য ফিরে এসেছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। প্রতিদিন বিকালে ইফতারকে কেন্দ্র করে ধনী-গরীব বিভিন্ন শ্রেণি পেশার রোজাদার হাজারও মানুষের এক মিলনমেলায় পরিণত হয় মসজিদটিতে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক কাতারে বসে ইফতারে শরিক হন সবাই।
জানা গেছে, করোনার আগে বেশ কয়েকবছর রমজানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বায়তুল মোকাররমে ইফতারের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হতো। তবে এবার বেসরকারি উদ্যোগে এই ইফতার আয়োজিত হচ্ছে। বায়তুল মোকাররম মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এই ইফতারের খরচ বহন করছেন।
শুক্রবার আসরের পরপর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, নামাজ আদায় করেই মসজিদের দক্ষিণ অংশে আজানঘরের সামনে মুসল্লিরা সারিবদ্ধভাবে বসে পড়েছেন। বসে বসে কেউ নিঃশব্দে তসবিহ জপছেন, কেউ বা মৃদু স্বরে করছেন জিকির। পাশেই একদল মানুষ ইফতার প্রস্তুত করা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কথা বলে জানা গেল, তাঁরা সবাই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির স্বেচ্ছাসেবক। আসরের নামাজের পরপরই তাঁরা ইফতারি গোছানো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বললেন, গত ফেব্রুয়ারিতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি গঠনের পর এই রমজান থেকে প্রতিদিন ৭০০ মানুষকে ইফতার করানো হচ্ছে। মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এই ইফতারের যাবতীয় খরচ বহন করছেন।
মিজানুর রহমান আরো বললেন, স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা বহু মানুষ বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করেন। রমজানের সময় অনেকে বুঝতে পারেন না কোথায় ইফতার করবেন। বহু মানুষ আছেন সামর্থ্যহীন। তাঁদের সবার জন্যই কমিটির এই ব্যবস্থা।
মুসল্লি কমিটির সভাপতি হাজি ইয়াকুব আলী বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীর সাহেব নিজস্ব তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন পানিসহ ৭০০ প্যাকেট ইফতারি এখানে পাঠিয়ে দেন। সাধারণ মুসল্লি থেকে শুরু করে ছিন্নমূল নারী-পুরুষ সবাই এখানে ইফতার করছেন।
তিনি বললেন, মক্কা-মদিনায় রমজান মাসে রোজাদারদের যে আতিথেয়তা করতে দেখা যায়, আমরা চাই বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদেও তেমন সংস্কৃতি গড়ে উঠুক। এবার ছোট করে শুরু করেছি, ভবিষ্যতে এটিসহ আরো নানা ধরনের কাজ বিস্তৃতভাবে করার আশা রাখি।