ক্ষমতাসীন দল ও সরকার দুর্নীতি করছে দাবি করে তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দিয়েছে বিএনপি। সোমবার দুপুরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুদকে গিয়ে এই চিঠি জমা দেয়।
এর আগে সকালে এ বিষয়ে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দুদকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান দুর্নীতির উৎসব চলছে। আমরা দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। তিনি বলেন, দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দুর্নীতির এই বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুদকে চিঠি দেবো। সেই চিঠিতে আমরা তদন্ত করার অনুরোধ করব। এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি ইস্যু যেটা আসছে, সেটা তুলে ধরব জাতির কাছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে নিয়ে দুদকের পথে রওনা হন দলের চিঠি পৌঁছে দিতে।
বিএনপির দুটি অভিযোগ পেয়েছি-দুদক সচিব : বিএনপির চিঠি গ্রহণের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, বিএনপির কয়েকজন এখানে এসেছিলেন। তারা দুটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। দুদকের তফসিল ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে সংস্থাটির সচিব মাহবুব হোসেন আরও বলেন, এখানে যে কেউ অভিযোগ করতে পারে। আমরা চাই জনগণ এগিয়ে আসুক। জনগণ এগিয়ে এলে দুর্নীতি দমন করা সহজ হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, দুদক একটি সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও ডেপুটিশনে আসা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এটা ঠিক না, এটা অনুচিত। তাদের এখানে অনেক জনবল রয়েছে। এ অনুচিত কাজের জন্য অনেক জাতীয় স্পর্শকাতর তদন্ত থেমে আছে, আটকে যাচ্ছে, এটা ঠিক না।
তিনি বলেন, আজ আমরা আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে দুটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমরা উনাদের বলেছি এখন থেকে আমরা নিয়মিত আসব। উনাদের সাহায্য করব দায়বদ্ধতা থেকে, যাতে উনারা সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার থাকতে পারেন।
এদিকে বিএনপি নেতাদের আসার খবরে দুদক কার্যালয়ে পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল : গতকাল সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে এখন দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। সাংবাদিকদের সাহসী লেখায় অনেক দুর্নীতির খবর বেরিয়ে এলেও এখন বিষয়গুলো যেন ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, আর কোনো কথাই হচ্ছে না এগুলো নিয়ে। আমরা দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা দুর্নীতির এই বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেব। সেই চিঠিতে তাদের আমরা তদন্ত করার অনুরোধ করব।
এরপর ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি ইস্যু যেটা আসছে, সেটা আমরা জাতির কাছে তুলে ধরব এবং একই সঙ্গে দুদকে পাঠাব। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি নিয়ে যাবেন বলে জানান মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব, দুদকের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং আমরা দুর্নীতির যে বিষয়গুলো দিচ্ছি, সেগুলোর ওপরে সুষ্ঠু তদন্ত করে তা জাতির সামনে তুলে ধরবে তারা, প্রয়োজনীয় আইনানুগ যে ব্যবস্থা আছে, তা গ্রহণ করবে।