স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধ নয়, এক ব্যক্তির জন্মশতবার্ষিকীকে সরকার প্রাধান্য দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, এখানে অবস্থা দৃষ্টিতে তাই মনে হয়েছে। তারা (সরকার) কতগুলো প্রোগ্রামে স্বাধীনতা যুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধে যারা সেদিন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রবাসী সরকার, এমএজি ওসমানি সাহেব ক‘বার তাদের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে, সেক্টার কমান্ডারদের নাম ক‘বার করা হয়েছে, তাজউদ্দিন সাহেবের(তাজউদ্দিন আহমেদ) নাম ক‘বার উচ্চারণ করা হয়েছে- আপনারা নিজেরাই তো বুঝবেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ কোথায় গেলো? এখানে তো একজন ব্যক্তির ব্যাপারটা এসে যাচ্ছে সামনে।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি হালকা করে বলি, আওয়ামী লীগের একটা কেমেস্ট্রি আছে যেটাকে বলা হয়, রসায়ন। রসায়নটা হচ্ছে কি যে, ফার্সীদের বলা হয় আনচু ডিজাবেস্ট মানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। এক মেগো অদ্বিতীয়া। এটাই সমস্যা তাদের।
রাজনীতিকে নির্মূলের চক্রান্ত: মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চতুর্দিক থেকে জাতিগতভাবে খুব বিপদজনক অবস্থায় পড়ে আছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিলো একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা সেটাই আজকে সবচেয়ে বিপদের সম্মুখিন হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে আমরা চিহ্নিত হয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী একটা দেশ হিসেবে। দেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, রাজনীতিকে নির্মূল করে দেয়া, বিএনপিকে নির্মূল করে দেয়ার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে তারা (সরকার)।
খালেদা প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা: মির্জা ফখরুল বলেন, যে নেত্রী একজন গৃহবধু ছিলেন। প্রথম জিয়াউর রহমান সাহেবের বিদ্রোহের পরে তার স্ত্রী তিনি সেদিন যখন সোয়াত জাহাজের দিকে এগুচ্ছিলেন তখন পাকিস্তানি কমান্ডার আমাদের অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার সোহরাব হোসেন সেনাবাহিনীর সৈনিকদের নিরাস্ত্র করবার চেষ্টা করছিলো সেই সময়ে কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রথম বলেছিলেন, তোমরা অস্ত্র সমর্পন করবে না যতক্ষন পর্যন্ত না জিয়াউর রহমান ফিরে আসেন। এই দিয়ে তার শুরু।
আমি সবসময় বলার চেষ্টা করেছি যে, দেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা কেউ যদি থাকে তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে (খালেদা জিয়া) আজকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ৪০ বছর ধরে যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন তাকে আজকে এই সরকার আটক করে রেখেছে। অসুস্থবস্থায় তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না তারা।
তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতা তারেক রহমান সাহেবও ওইসময় কিন্তু তার ছোট ভাইসহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বন্দি ছিলেন। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের ওই ছোট মানুষটির অবদানও কেউ অস্বীকার করার উপায় নেই। এই নেতাকে আজকে দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সদস্য সচিব আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।