ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা মানবতা বিরোধী অপকর্মে লিপ্ত। তারা কোন ধর্মেরই অনুসারী নয়। হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অশুভ উদ্দেশ্যে তারা ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি করে। এসব অপতৎপরতা বন্ধে ইমাম, আলেম ওলামা সহ সকল ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ ১২ নভেম্বর.(শুক্রবার) বিকেল ৩ টায় মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে মাদারীপুর জেলার সন্মানিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে আন্তঃ ধর্মীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষের মাঝে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় আন্তঃ ধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের মধ্যে নৈতিকতা ও অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদান করা হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল ধর্মের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের অংশ গ্রহণে জাতীয় পর্যায় আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধর্মের উপর আঘাত আসলে প্রতিবাদ করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্য সঠিকভাবে যাচাই না করে কেবল গুজবের উপর নির্ভর করে অন্য ধর্মের উপর আঘাত হানাকে ইসলাম সহ কোন ধর্মই সমর্থন করেনা। এধরনের কাজ ধর্ম, সমাজ ও রাস্ট্র বিরোধী।
প্রতিমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বিষয়য়ে সকলকে আরও সতর্ক ও সাবধান থাকার আহবান জানান।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সম্প্রীতির পরিবেশ বাংলাদেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অক্ষুণ্ণ সারাদেশে সম্পত্তির পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, কর্মকর্তা কর্মচারীগণ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সুশীলসমাজ, সাংবাদিকবৃন্দ সহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড.রহিমা খাতুন এর সভাপতিত্বে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মোঃ আব্দুস সোবহান মিয়া, এমপি।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, শিবচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মোল্লা, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালেদ হোসেন রিয়াদ, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন মাদারীপুর জেলার উপপরিচালক এম ওয়াহিদুজ্জামান, মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, মাদারীপুর আহমদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ শাহাদাত হোসেন, মাদারীপুর ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদের সভাপতি, মাদারীপুর জেলার হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি,মাদারীপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সভাপতি অগাস্টিন বৈদ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মাদারীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান খান প্রমুখ।
এর আগে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান ১২ নভেম্বর,২০২১ খ্রি.(শুক্রবার) সকাল ১০.০০ টায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর আওতাধীন "ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ" শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ/সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে আন্তঃ ধর্মীয় সংলাপ/ সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মুনীম হাসান, পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুজ্জামান, শরীয়তপুরের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রঘুনাথ পোদ্দার, মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান, মাদারীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুছ ছামাদ তালুকদার,
আন্তঃধর্মীয় সংলাপে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ" শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ আল শাহীন সহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি বৃন্দ এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী গণ উপস্তিত ছিলেন।