বৃহত্তর একটি জোট গঠনের মাধ্যমে শিগগিরই নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি রাত নয়টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ওই সভা চলে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইনের বিল পাস হয়। এর পরদিন বিএনপি ওই সভা করে। এর আগে তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এই আইন আমরা মানি না। এটি শুধু আমাদের কাছে নয়, দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, গ্রহণীয় হতে পারে না। আর যে আইন মানুষ গ্রহণ করে না- সেটি কোনো আইনই নয়, সেটাকে কেউ মানবে না, এটাকে কেউ মানবেই না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহত্তর জোট গঠনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চলছিল। তবে তা হচ্ছিল না। তবে সরকার নিজেদের পছন্দমতো ইসি গঠনে আইন করে আবারও একতরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। আইন পাসের পর তাঁরা তাগিদ অনুভব করেন যে এই সরকারকে আর বেশি দিন সময় দেওয়া যায় না। এক দফা নিয়ে আন্দোলনে নামা ছাড়া সামনে বিকল্প নেই।
বর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট—নামের দুটি জোট আছে। এই দুই জোটকে সঙ্গে রেখে নতুন করে কোন ফর্মে বৃহত্তর জোট হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানান বিএনপির আরেক নেতা। তবে এ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে ওই নেতা জানান। তিনি বলেন, যে যেখানে আছেন, তাঁদের সবার সঙ্গে এক দফা নিয়ে আলোচনা করেই বৃহত্তর জোট গঠন করা হবে। কাউকে বাদ দেওয়া হবে না। যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন—এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, গতকালের (শুক্রবার) সভায় কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে রাজপথে যারাই থাকবে, তাদের নিয়েই বৃহত্তর জোট গঠনের চিন্তা করছি।
উল্লেখ্য, বিএনপির শীর্ষ নেতারা বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলে আসছেন যে, এই সরকারের অধীনে আমরা আর কোন নির্বাচনে যাব না। একটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ের মধ্য দিয়েই আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। প্রয়োজনে বৃহত্তর গণ আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের পতনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে বলেও দলটির নেতারা ঘোষণা দেন।