ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশের সীমান্ত ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দেশ হয়তো স্বাধীন আছে, ধীরে ধীরে ভারতের আগ্রাসনের কারণে দেশ পরাধীন হয়ে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হওয়ার অবস্থা তৈরি হচ্ছে। বিএসএফ প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা করছে। তার প্রতিবাদ না করে সরকারের শীর্ষ নেতারা ভারত বন্দনায় ব্যস্ত। ঢাকার অনুষ্ঠানে ভারতীয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়, স্বররাষ্ট্র মন্ত্রীর উপস্থিতিতে। তিনি বলেন, বিরোধী দল ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। এতে ভারত যতটুক না ক্ষিপ্ত, তার চেয়ে সরকার দলীয় লোকজন বেশি ক্ষিপ্ত। এটা ভাল লক্ষণ নয়।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুষ্পদাম রেস্টুরেন্টে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ইসলামী শ্রমনীতি কল্যাণমুখি অর্থনীতি ও শ্রমিক বান্ধব রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় মাহে রমজানের ভুমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী মোস্তফা কামালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম। বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, ছাত্রনেতা নুরুল বশর আজিজী, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক এএএম ফয়েজ হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মিন্টু, নির্মাণ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গণী, , শ্রমিক মজলিসের সভাপতি প্রভাষক আব্দুল করীম, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি মো. বাচ্চু মিয়া, গণঅধিকার শ্রমিক পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, গণমুক্তি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল মোমেন, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, ওয়ায়েজ হোসেন ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম রফিকুল ইসলাম, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, আলহাজ্ব শাহাদাত হোসাইন কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি এত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যে যদি দুর্নীতি বন্ধ হয় তাহলে এক বছরেই কয়েকটা পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, শাসক গোষ্ঠীর উন্নয়নের বুলি মিথ্যায় পর্যবষিত হয়েছে। উন্নয়নের জোয়ারে দেশ ভাসলেও সারাদেশে অসংখ্য মানুষ খাবারের কষ্ট পাচ্ছে। শ্রমিকরা খাবারের কষ্ট পাচ্ছে। উন্নয়নের যে সব কথা শোনা যায় তা নির্দিষ্ট লোকজনের উপকারে কাজে আসতেছে। সাধারন মানুষের উপকার হচ্ছে না। তিনি বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন না থাকায় শ্রমিকরা লাঞ্চিত-বঞ্চিত ও অবহেলিত। বিভিন্ন মিল-কারখানায় সামান্য অজুহাতে শ্রমিক হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ঈদের আগেই শ্রমিকদের বকেয়া ও বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মাহে রমজানের শিক্ষা গ্রহণ করে সঠিকভাবে যাকাত আদায় করলে দেশের মানুষ না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থাকবে না। সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন,সঠিকভাবে সম্পদের হিসাব করে যাকাত আদায় করলে দেশের একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না। যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে অসহায়, দারিদ্র ও গরিব মানুষ থাকবে না। কারণ যাকাত দেয় ধনীরা, পায় গরিবরা। অপরদিকে সুদ খায় ধনীরা, সুদ দেয় গরিবরা। ফলে ধনীরা আরো ধনী হয়, আর গরিবরা আরো গরিব হয়ে পথের ভিখারী হয়। এজন্য দেশের চলমান অথনৈতিক বৈষম্য দূর করতে হলে এবং ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়তে হলে ইসলামী অর্থনীতি তথা যাকাতভিত্তিক
‘বদরের শিক্ষা আমাদের করণীয়'’ শীর্ষক আলোচনা
ইফতার মাহফিল ও বদরী সদস্য সম্মেলন শনিবার:
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ৩০ মার্চ (১৯ রমজান) শনিবার, বিকাল ৪টায় কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বদরের শিক্ষা আমাদের করণীয়'’ শীর্ষক আলোচনা, ইফতার মাহফিল ও বদরী সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে আলোচনা রাখবেন।