শিরোনাম
  • ফের যে আসন থেকে নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটবলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইসরায়েল কে এই নতুন মেসি-ইয়ামাল? ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোতে যে নতুন নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আলুর দাম নিয়ে যে দুঃসংবাদ শোনালেন বাণিজ্য উপদেষ্টা হাইকোর্টের রায়ের স্থগিতাদেশ নিয়ে যা জানালেন আইনজীবী শিশির মনির নির্বাচন নিয়ে নতুন যে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার নির্বাচন নিয়ে চাপ দিলে পদত্যাগ করবো: সিইসি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
  • তওবায়ে নাসুহা‘র সঠিক অর্থ এবং ভ্রান্তি নিরসন 

    ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

    তওবায়ে নাসুহা‘র সঠিক অর্থ এবং ভ্রান্তি নিরসন 

    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।।

    প্রশ্ন: তওবায়ে নাসুহা কি? কুরআনে কি নাসুহা নামক কোনও ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, তোমরা নাসুহার মত তওবা করো। এর প্রকৃত অর্থ  কি?

    উত্তর:
    আল্লাহ আমাদেরকে তওবায়ে নাসূহা করার নির্দেশ দিয়ে বলেন,
    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّـهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
    “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে তওবায়ে নাসূহা তথা আন্তরিক তওবা করো। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। (সূরা তাহরীম: ৮)

    ◈◈ তাওবায়ে নাসুহা এর সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা:

    ◍  তওবায়ে নাসূহা অর্থ: খাঁটি ও নির্ভেজাল তওবা, একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতাপূর্ণ তওবা। অর্থাৎ এমন আন্তরিকতা ও দৃঢ় প্রত্যয় সহকারে তওবা করা যে, তওবা কারী আর কখনো জেনেবুঝে উক্ত গুনাহে লিপ্ত হবে না।

    নিম্নে এ বিষয়ে সাহাবি, তাবেঈ ও মুফাসসিরদের অভিমত উল্লেখ করা হল:

    ◍  ইবনে কাসির রহঃ বলেন, তওবায়ে নাসুহ অর্থ:  توبة صادقة جازمة  "সত্য ও প্রত্যয় পূর্ণ তওবা।"

    ◍  তাফসিরে মুয়াসসার গ্রন্থে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে:
    ارجعوا عن ذنوبكم إلى طاعة الله رجوعا لا معصية بعده
    “তোমরা তোমাদের গুনাহ থেকে আল্লাহর আনুগত্যের পথে এমনভাবে ফিরে আসো যেন পরে আবার গুনাহর দিকে ফিরে না যাও।” 

    سُئل عمر عن التوبة النصوح، قال: التوبة النصوح: أن يتوب الرجل من العمل السيئ، ثم لا يعود إليه أبدًا

    ◍ উমর রা.কে তওবায়ে নাসুহ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন মানুষ খারাপ কাজ থেকে তওবা করবে অতপর আর কখনও ফিরে আসবে না।",

     عن ابن عباس، قوله: ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا ) أن لا يعود صاحبها لذلك الذنب الذي يتوب منه
    ◍ ইবনে আব্বাস বলেন, "তওবা কারী যে গুনাহ থেকে তওবা করবে সে গুনাহে আর ফিরে আসবে না।"
    عن مجاهد، قوله: ( تَوْبَةً نَصُوحًا ) قال: يستغفرون ثم لا يعودون
    ◍ মুজাহিদ থেকে বর্ণিত হয়েছ,  তিনি বলেন, "আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার পর আবার সে অন্যায় করবে না।" (সূত্র: তাফসিরে ত্ববারাী)

    ◈◈ তওবা নাসুহা এর ভুল ব্যাখ্যা:  
    আমাদের সমাজে কতিপয় বক্তাকে বলতে শুনা যায়, "পূর্ব যুগে নাসূহা নামে একজন বুজুর্গ লোক ছিল। আল্লাহ আমাদেরকে বলেছেন, তোমরা সেই নাসূহার মত তওবা করো।" কিন্তু এই ব্যাখ্যাা কোনও নির্ভরযোগ্য তাফসিরে আসে নি। সুতরাং তা বানোয়াট কথা।

    ইবনে তাইমিয়া রহ. এ প্রসঙ্গে বলেন,

    وَمَنْ قَالَ مِنْ الْجُهَّالِ: إنَّ ” نَصُوحَ ” اسْمُ رَجُلٍ كَانَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَتُوبُوا كَتَوْبَتِهِ: فَهَذَا رَجُلٌ مُفْتَرٍ كَذَّابٌ جَاهِلٌ بِالْحَدِيثِ وَالتَّفْسِيرِ جَاهِلٌ بِاللُّغَةِ وَمَعَانِي الْقُرْآنِ؛ فَإِنَّ هَذَا امْرُؤٌ لَمْ يَخْلُقْهُ اللَّهُ تَعَالَى وَلَا كَانَ فِي الْمُتَقَدِّمِينَ أَحَدٌ اسْمُهُ نَصُوحٌ وَلَا ذَكَرَ هَذِهِ الْقِصَّةَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَلَوْ كَانَ كَمَا زَعَمَ الْجَاهِلُ لَقِيلَ تُوبُوا إلَى اللَّهِ تَوْبَةَ نَصُوحٍ وَإِنَّمَا قَالَ: {تَوْبَةً نَصُوحًا} وَالنَّصُوحُ هُوَ التَّائِبُ. وَمَنْ قَالَ: إنَّ الْمُرَادَ بِهَذِهِ الْآيَةِ رَجُلٌ أَوْ امْرَأَةٌ اسْمُهُ نَصُوحٌ وَإِنْ كَانَ عَلَى عَهْدِ عِيسَى أَوْ غَيْرِهِ فَإِنَّهُ كَاذِبٌ يَجِبُ أَنْ يَتُوبَ مِنْ هَذِهِ فَإِنْ لَمْ يَتُبْ وَجَبَتْ عُقُوبَتُهُ بِإِجْمَاعِ الْمُسْلِمِينَ

    "আর যে মূর্খ ব্যক্তি বলে যে, নাসূহ হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগের এক ব্যক্তির নাম। লোকদেরকে ঐ ব্যক্তির মত তওবা করতে আদেশ করা হয়েছে।

    যে এমন কথা বলে, সে ব্যক্তি একজন অপবাদ দাতা, মিথ্যুক এবং হাদিস ও তাফসির সম্পর্কে অজ্ঞ। সেই সাথে আরবি ভাষা ও কুরআনের অর্থ সম্পর্কে মূর্খ। কেননা সে এমন [এক কাল্পনিক] ব্যক্তি যাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেননি। আর পূর্ব যুগে এমন কাউকে পাওয়া যায় না, যার নাম নাসূহ ছিল। আর এমন ঘটনা কোন আলেম বর্ণনা করেন নি।

    যদি তাই হতো-যা মূর্খ ব্যক্তিটা মনে করে-তাহলে কুরআনের আয়াতের শব্দ হতো تُوبُوا إلَى اللَّهِ تَوْبَةَ نَصُوحٍ অথচ কুরআনের শব্দ এসেছে تَوْبَةً نَصُوحًا। নাসূহ হল, তওবাকারী। 

    আর যে বলে যে, এ আয়াত দ্বারা একজন পুরুষ বা নারীকে বুঝানো হয়েছে-যার নাম হল নাসূহ। যে ঈসা আলাহিস সালাম বা অন্য কোন নবীর যুগের ছিলেন- সে ব্যক্তি একজন মিথ্যুক। এ থেকে তার তওবা করা ওয়াজিব। যদি সে তওবা না করে, তাহলে মুসলিমদের সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেয়া আবশ্যক। [মাজমু ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া: ১৬/৫৯]

    মহান আল্লাহ আমাদেরকে সকল প্রকার পাপাচার থেকে তওবায়ে নাসুহ তথা নিখাদ ও একনিষ্ঠ চিত্তে পূর্ণ আন্তরিকতা সহকারে আল্লাহর নিকট তওবা করার তাওফিক দান করুন- যেন আমরা আর কখনও কু প্রবৃত্তি ও শয়তানের প্ররোচনার কাছে পরাজিত হয়ে আবারও সেই অন্যায়ের পথে পা না বাড়াই। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।
    আল্লাহু আলম।

    ▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
    উত্তর প্রদানে:
    আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
    fb id: AbdullaahilHadi
    দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব




    সাতদিনের সেরা খবর

    ধর্ম - এর আরো খবর

    হজে আরও ৯১ নতুন এজেন্সির অনুমোদন

    হজে আরও ৯১ নতুন এজেন্সির অনুমোদন

    ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

    হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    হারামকে হালাল জ্ঞান করার ভয়াবহ পরিণতি

    ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

    এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হবে না

    এ বছর সরকারি খরচে কাউকে হজে পাঠানো হবে না

    ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন