শিরোনাম
  • বন রক্ষায় বন কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে: পরিবেশ ও বনমন্ত্রী  পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিএনপির লজ্জা পাওয়া উচিত: কাদের বৃত্তি পেল সেরা ১৫ জন স্কুল ক্রিকেটার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে আজ, অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে সবার চাওয়া সুষ্ঠু ও পক্ষপাতহীন উপজেলা নির্বাচন: ইসি আহসান হাবিব  তরুণদের উদ্ভাবনী জ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাকে কাজে লাগাতে হবে : স্পিকার ক্ষমতার জন্য বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে :  কাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনায় নতুন নির্দেশনা জলবায়ু অভিযোজনে সহায়তা দ্বিগুনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী  বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
  • বঙ্গবন্ধু টানেল : দেশের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের অবদান

    ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

    ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

    বঙ্গবন্ধু টানেল : দেশের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের অবদান

    চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন শনিবার ২৮ অক্টোবর টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয় পতেঙ্গা প্রান্তে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ দুই যুগের ও বেশি সময় পরে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আসেন। এরপর আনোয়ারা প্রান্তে কোরিয়ান ইপিজেডের মাঠে একটি জনসভা হয়।“টানেলের উদ্বোধনের পর দিন সকাল ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। “প্রকল্পের এলাইনমেন্ট পতেঙ্গা প্রান্ত, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হতে কর্ণফুলী নদীর ২ কিলোমিটার ভাটিতে। আর টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত আনোয়ারা উপজেলার কাফকো সার কারখানার নিকটে। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।“দুই টিউব বিশিষ্ট চার লেনের টানেল প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তা ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।”

    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার হলেও মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার। ব্রিজ-ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ৭২৭ মিটার (আনোয়ারা প্রান্তে), অ্যাপ্রোচ সড়কের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার, টোল প্লাজার দৈর্ঘ্য ৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার, আন্ডার পাস ৬টি (আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচটি এবং পতেঙ্গা প্রান্তে একটি), কালভার্ট ১২টি, সার্ভিস এরিয়ার ৩০টি বাংলো, একটি ভিআইপি বাংলোসহ মোটেল মেস, হেলনা সেন্টার, কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, সুইমিংপুল, ব্রিজ, মসজিদ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা রয়েছে।

    টানেল নির্মাণে বাণিজ্যিক চুক্তি হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুন। পরের বছরের ১৪ অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তি পরস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রী টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি।


    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে ৫০ টাকার মূল্যমানের স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২৯ অক্টোবর থেকে মিলবে নতুন এ স্মারক নোট। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল' উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ৫০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৮ অক্টোবর সকাল ১১টায় টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্মারক নোটটি আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করবেন।এরপর  ২৯ অক্টোবর থেকে এ স্মারক নোট বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের পাশাপাশি চট্টগ্রাম অফিসে এবং পরবর্তীতে অন্যান্য শাখা অফিস ও টাকা জাদুঘর থেকে পাওয়া যাবে।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত এ স্মারক নোটের সম্মুখভাগের বামপাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি ও ডানপাশে টানেলের সম্মুখ অংশের ছবি সংযোজন করা হয়েছে। নোটের পেছনে টানেলের ভেতরের অংশের আরেকটি ছবি সংযোজন করা হয়েছে।
     
    নোটের সম্মুখভাগে শিরোনাম 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল/সংযোগে নতুন সম্ভাবনা' এবং পেছনভাগে ইংরেজিতে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল/ কানেকটিভিটি ক্রিয়েটস অপরচুনিটি' লেখা আছে।
     
    নোটের সম্মুখভাগের ওপরে বামকোণে স্মারক নোটের মূল্যমান বাংলায় '৳৫০', নিচে ডানকোণে মূল্যমান ইংরেজিতে '50', এবং নিচে সিরিজ ও সিরিয়াল নম্বরের ডানে 'পঞ্চাশ টাকা', 'বিনিময়যোগ্য নয়' লেখা আছে। নোটের পেছনভাগের ওপরে বামকোণে মূল্যমান বাংলায় '৳৫০', নিচে ডানকোণে মূল্যমান ইংরেজিতে '50',  উপরে ডানকোণে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ও ইংরেজিতে 'ফিফটি টাকা' এবং নিচে বামকোণে ইংরেজিতে 'বাংলাদেশ ব্যাংক, ‌কমেমোরেটিভ নোট' লেখা আছে।
    পরিশেষে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু টানেল বর্তমান সরকারের অবকাঠামোগত উন্নয়নের অনন্য উদাহরণ। আর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল বাংলাদেশের  প্রথম ও একমাত্র টানেল। শুধু তাই নয় দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম ও দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথও এটি। বর্তমান সরকারের ওয়ান টানেল টু সিটি কনসেপ্টে আনোয়ারা অংশের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনে।

    দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে পর্যটন শহর কক্সবাজার, পার্বত্য জেলা বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার যোগাযোগ সহজতর হবে। সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। আর বর্তমান সরকার ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের ঘোষণা ছিল। চট্টগ্রামের একাধিক জনসভাতেও বিষয়টি উল্লেখ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। দায়িত্বগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় কর্ণফুলী টানেল বাস্তবায়নের কাজ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে (বিবিএ) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯ এপ্রিল ২০১১ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ দেওয়া হয় হংকংয়ের আরুপ অ্যান্ড পার্টনার্স এবং চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে। ১৭ এপ্রিল ২০১৩ সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। ২০১৪ সালের ৯ জুন বেইজিংয়ে চীনের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৫ সালের ৩০ জুন নির্মাতা চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসিসিসির সঙ্গে চুক্তি সই হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানেলের মূল নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ উপকূলীয় এলাকায় আরও ৭০টিরও বেশি মেগাপ্রজেক্টের কাজ চলমান বাস্তবায়িত। একদিকে সমুদ্রবন্দর আরেকদিকে আধুনিক নগরী; চীনের সাংহাইয়ের এই মডেল অনুসরণ করে এই টানেল তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও অনেক প্রকল্প। চট্টগ্রামের মিরসরাইর জোড়ারগঞ্জ থেকে টানেল হয়ে আনোয়ারা উপকূল থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে ৬ ও ৪-লেনের মেরিন ড্রাইভ। আর এই টানেলের কারণে মূল শহরের উপর চাপ কমবে যানবাহন ও জনসংখ্যার।

    মূলত বঙ্গবন্ধু টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের স্মার্ট যাত্রা শুরু হয়েছে । এটি চট্টগ্রাামকে চীনের সাংহাই শহরের মতো ‘দুটি শহরকে একটি শহরে’ পরিণত করবে। কারণ এটি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে এবং শিল্পায়ন, পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও সড়ক যোগাযোগ বিকাশে অপার সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করে শহরের পরিধিকে সমগ্র অঞ্চলে প্রসারিত করবে।আর প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা শক্তির কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদাত্ত আহবানে আসুন আমরা দলমত নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি যা হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নপূরণের একমাত্র পথ।এই সময়ের বাংলাদেশে তিনি একজন ব্যক্তি মাত্র নন, ব্যক্তির ঊর্ধ্বে গণমানুষের আশা-জাগানিয়া অভিভাবক। নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় নেই। সকাল-দুপুর-বিকাল-রাত কেটে যায় দেশ মানুষের মঙ্গল চিন্তায়। তিনি দীর্ঘ জীবনের সুস্থতা নিয়ে আমাদের মাঝে সজীব থাকবেন এই প্রত্যাশা আমাদের।মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।


    লেখক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
    কলাম লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লষক
    ইমেইল, drmazed96@gmail.com




    বিশেষ কলাম - এর আরো খবর

    ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস 

    ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস 

    ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

    ভাসানীর ঐতিহাসিক কীর্তি ৫৭'র কাগমারী সম্মেলন

    ভাসানীর ঐতিহাসিক কীর্তি ৫৭'র কাগমারী সম্মেলন

    ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

    শেখ হাসিনার হাত ধরে নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ

    শেখ হাসিনার হাত ধরে নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ

    ২৯ অক্টোবর, ২০২৩ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন