কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ২০২ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংঘাত, মামলা-গ্রেফতার পরিস্থিতিতে বাদ যাওয়া ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন নেতাও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এমনকি মামুনুল হকসহ যারা কারাবন্দি আছেন, মুক্ত হলে তাদেরও পদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফাজতের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী নতুন এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন।
নতুন কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মীর ইদ্রিস জানিয়েছেন, ২০২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ৫৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন হয়েছে।
নতুন কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে সুলতান যওক নদভীকে। আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও সিনিয়র নায়েবে আমির খলিল আহমদ কাসেমী ও আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর। নতুন কমিটিতে নায়েবে আমির করা হয়েছে ৪৫ জনকে। মহাসচিব পদে আছেন সাজিদুর রহমান।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে আছেন জুনায়েদ আল হাবীব। ১০ জন যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হারুণ ইজাহারও আছেন। গত কমিটিতে এ তিনজন বিভিন্ন পদে ছিলেন। কিন্তু সংঘাতের পর তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তাদের কমিটি থেকেও বাদ দেয়া হয়েছিল। ইসলামাবাদী ও হারুণ ইজাহার নেজামে ইসলাম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
১৪ জনকে সহকারী মহাসচিব করা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মুফতি বশিরউল্লাহ। আটজনকে সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। অর্থ, প্রচার, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি, দফতর, সমাজকল্যাণ, আইন, দাওয়াহ, তথ্য ও গবেষণা, ছাত্র ও যুবসহ সম্পাদকমণ্ডলীর বিভিন্ন পদে আরও ১১৭ জনের ঠাঁই হয়েছে।
২০১০ সালে দেশের কওমি অঙ্গনের প্রবীণ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়। আহমদ শফী আমির এবং জুনায়েদ বাবুনগরী প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৩ সালে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির নামে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছিল সংগঠনটি। পরবর্তী সময়ে নানা পটপরিক্রমা ও শীর্ষ নেতাদের একের পর এক মৃত্যুতে বেশ জটিতায় পড়ে হেফাজত। তাছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার কারণে গ্রেপ্তার হন সংগঠনটির বহু নেতা। এতে দুর্বল হয়ে পড়ে হেফাজতের কার্যক্রম। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সংগঠনটি নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।