বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। এইবারের লড়াই জীবনপণ লড়াই। কোন ভাবেই আমাদেরকে আটকানো যাবে না।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজিত গণমিছিলের পূর্বে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরু গণমিছিলে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, একটাই দাবি, দাবি কি? তখন তিনি নেতাকর্মীদের সাথে বলেন, হাসিনার পদত্যাগ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৪ ও ১৮ সালের মতো নির্বাচন করে পার পেতে চায় আওয়ামী লীগ। দেশের জনগণ কি সেটা হতে দিবে? নেতাকর্মীরা বলেন, না। শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, মানে মানে কেটে পড়ুন, পদত্যাগ করুন, সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি বলেন, না হলে আমাদের নেতাও বলেছেন ফয়সালা হবে রাজপথে। এবারের লড়াই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়াই, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লড়াই।
বিএনপি মহাসচিব সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "আমরা নতুন যুদ্ধে নতুন লড়াই শুরু করেছি। মিছিলের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই তোমাদের দিন শেষ। মানে মানে পদত্যাগ কর।'
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে দেশের বিচার ব্যবস্থা। বিচারালয়ের উপর ভর করে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় আমাদের নেতা কর্মীদের সাজা দিচ্ছে।
তিনি প্রশ্ন করেন, তাতে কি আন্দোলন বন্ধ করা যাবে? যতই নির্যাতন কর, কারাগারে ঢুকাও, আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে এনে ঘরে ফিরব।
তিনি বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে বলেন, সংসদ ভেঙ্গে পদত্যাগ করে সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে।
তিনি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দুইটা নতুন দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, কেউ এই দুই দলকে চেনে না। এদের দিয়ে সরকার নির্বাচন-নির্বাচন খেলা খেলতে চায়। এবার এ খেলা খেলতে যাওয়া হবে না বলেও সরকারকে হুশিয়ার করে দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এবারের লড়াই হচ্ছে হচ্ছে জীবন মরণ লড়াই। কোন ভয় দিতে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেননভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক। বক্তব্য শেষে আবুল হোটেল পর্যন্ত গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে কমলাপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিকেলে পৌনে চারটার দিকে মালিবাগ মোড় অভিমুখে গণমিছিল শুরু হয়। গণমিছিল উপলক্ষে কমলাপুর ও আশেপাশের এলাকায় যান চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হয়। মিছিলে মির্জা আব্বাস ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ডা. জাহিদ হোসেন, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।