আজ আমার পরম শ্রদ্ধেয় বাবার ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী! বাবা ছাড়া আমাদের ৪১ বছর!
বাবার তুলনা বাবাই। যার কল্যাণে এই পৃথিবীর রূপ, রং ও আলো দেখেছি। বাবা ছিলেন আমার কাছে শাশ্বত, চির আপন, চিরন্তন এক আদর্শ।
বাবা চাকরি করতেন পানি উন্নয়ন বোর্ডে। তার বয়স তখন মাত্র ৪৬ বছর। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো বাবা হারিয়ে গেলেন চিরতরে। তখন আমার বয়স মাত্র ২৩। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে আমার সেই ছোট্ট কাঁধে চেপে বসলো অনেক বড় দায়িত্ব। মা এলেন দৃশ্যপটে। তিনিই পরম মমতায় আগলে মানুষ করলেন আমাদের, ভাইবোনদের। আজ মমতাময়ী সেই মা- ও নেই।
আদর-শাসন আর আবদার পূরণের জায়গা হলো বাবা। সেই শুণ্যতা আজো বয়ে চলেছি চার দশকের বেশি সময় ধরে।
বাবার শুণ্যতা আমাদের দেখিয়েছে নিষ্ঠুর বাস্তবতা। বাবার মমতা আর অভিভাবকহীনতার প্রতিটি মূহুর্ত কতটা হাহাকার আর কষ্ট দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশের নয়।
প্রতিটি সন্তানের কাছে বাবা মানেই অসীম এক শক্তি আর সাহসের প্রতিচ্ছবি। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ দেখতাম আর হৃদয়টা ভরে উঠতো নিদারুণ কষ্টে। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু যখন বাবার হাত ধরে ঈদের জামাতে যেতো, জামার মাপ নিতে দর্জির দোকানে যেতো, মেলায় ঘুরতো তখন বুকের মধ্যে বাবার জন্য হাহাকার করতো। কষ্টে বুক ভরে যেতো।
জীবদ্দশায় বাবা আমার জন্য তাঁর আদর্শ রেখে গেছেন। ছোট্ট এই জীবনকে আনন্দময় করার জন্য সততার চেয়ে বড় আদর্শ আর কী হতে পারে। বাবা! আজ আপনি নেই। আপনি ছাড়া আমি যে কী অসহায়, এই বাবা শুণ্য জীবনে তা স্মরণ করিয়ে দেয় প্রতিটি মূহুর্ত।
বাবা হারানোর এই তিনটা অতিবাহিত করলাম সমাজের সুবিধাবঞ্চিত আমার মতো অসংখ্য বাবাহীন এতিমদের শিক্ষার্থীদের সাথে।
হে আল্লাহ, আপনি আমার বাবা ও মা কে ক্ষমা করে দিন! তাদের কবরের আজাব মাফ দিন। তাদের রুহের শান্তি দিন। তাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দিন।
রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ঈয়ানী সাগিরা।
# ডা. এনামুর রহমান, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী