সমাজ থেকে মাদক ও বাল্যবিয়ে রোধ করায় আমার লক্ষ্য

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

৮ মে, ২০২৪ ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

সমাজ থেকে মাদক ও বাল্যবিয়ে রোধ করায় আমার লক্ষ্য

কারাতে প্রতিযোগিতায় শুধু জাতীয় নয় আন্তজার্তিকভাবে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে সোনর বাংলাদেশ গড়তে হত দরিদ্রদেরকে পথ থেকে তুলে নিয়ে এসে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলে মাদক, বাল্যবিয়ে মুক্ত সমাজ গঠন করবো ইনশাল্লাহ। কথাগুলো বললেন কারাতে প্রতিযোগিতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে ২৩টি স্বর্ণপদক, পাঁচটি তা¤্র পদক ও ছয়টি রৌপ্য পদক প্রাপ্ত রোকিয়া খাতুন।তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের অজোপাড়া বাগদুর্গাপুর গ্রামের হতদরিদ্র রিক্সাচালন মো: মোন্তাাজ আলির ও গৃহিনী মোসা:শাহাজাদী বেগমের কন্যা মোসা: রোকিয়া খাতুন। তিনি জানান ২০১৪ সালে কানসাট উচ্চবিদ্যালয় হতে এস এসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ আর্থিক সংকটের কারণে আটকে গেলে আমি অনেকের কাছে হাত পেতে কেউ সহযোগিতা না পাওয়ায় পিতার উপার্জনের একমাত্র সম্বল রিক্স্রা বিক্রী করে ফরম পূরণ করে উত্তীর্ণ হই। পিতার উপার্জনের একমাত্র হাতিয়ার রিক্সাটি বিক্রী করায় আমার হতভাগা বাবা উপার্জন অক্ষম হয়ে পড়ায় আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে উপক্রম হযে পড়লে আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের দুটি ছাত্রবাসে ঝি এর কাজ করে কানসাট সোলেয়মান ডিগ্রী কলেজে লেখাপড়া করি ও জেলা পুলিশ সুপার বশির উদ্দিনের সহযোগিতায় চাঁপাইনবাবঞ্জ ক্রীড়া সংস্থায় ভর্তি হয়ে খেলাধূলায় অধ্যায়ন শুরু করি। এমতাবস্থায় আমি ২০১৫সালে চতুর্থ বেগম ফজিলাতুন নেশা মজিব আন্তর্জাতিক মার্শাল আট প্রতিযোগিতায় কারাতে অংশ গ্রহন করে প্রথম স্বর্ণপদকসহ ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ৩৬ আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে বিজয়ী হয়ে ২৩টিতে স্বর্ণপদক,পাঁচটিতে তা¤্রপদক ও ছয়টিতে রৌপ্য পদক অর্জন করি। সকলের দোয়ায় আামি আরো অনেক দূর অগ্রসর হতে পারবো বলে বিশ^াস করি।অনুভুতিতে রোকিয়া আরো বলেন আমি জানি একজন দিনমজুরের ঘরে জন্ম গ্রহন করে নিজেকে গড়া কত কঠিন ও এর খরচ বহন করা একজন দিনমজুর পিতার জন্য কত বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমার জীবনের পণ আমি পিতার আদর্শকে লালন করে হতদরিদ্র ঘরের জন্ম গ্রহনকারী কন্যা সন্তানদের লেখা পড়া শিখিয়ে মাদক ও বাল্যবিয়ে মুক্ত সমাজ গঠন করবো। রোকিয়ার রিক্সা চালক পিতা মোন্তাজ আলি ও গৃহিনী মা শাহাজাদী বেগম বলেন আমরা পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার নিয়ে এরশাদ সরকারের দেয়া এক টুকবার জমির ওপর ভাঙ্গা ঘরে বাস করলেও আমরা মহাখুশী। অসহায় একজন রিক্সাচালকের মেয়ে বিশ^বিজয়ী হতে চলেছে, যা আমাদের জন্য গর্বের।আমরা যেন আত্মহারা। কানসাট সোলেয়মান ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো: সফিকুল ইসলাম,কানসাট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন,আহাদ আলি, পারভিন বেগম ও নার্গিস বেগম জানান,রোকিয়া খাতুন শুধু কানসাটের গর্ব নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গর্ব। কারণ তার কারনেই আজ কানসাট সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাম বিশে^র কাছে পরিচিত লাভ করেছে। কানসাট ইউপি চেয়ারম্যান সেফাউল মুলক বলেন,একমাত্র রোকিয়ার মাধ্যমে বিশে^র দরবারে কানসাটের গর্ব ফুটে ওঠায় আমরা আনন্দিত।এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমাদের সহযোগিতা সব সময় থাকবে। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো:আরিফুল ইসলাম বলেন,একমাত্র রোকিয়াই প্রমান করতে পেরেছে যে মনোবল থাকলে নি¤œ বিত্তের ঘরের মেয়েরাও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে বিশ^ জয় লাভ করতে পারে। রোকিয়া খাতুন শুধু কানসাট, শিবগঞ্জের নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অদ্বিতীয়। তিনি অচিরেই তার সাফল্য দিয়ে বিশে^র প্রভাবশালী দেশগুলোতে কারাতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশের নাম উজ্জল করবে।দৈনিক ইত্তেফাকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি রানী হাট্টি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা তমলিম উদ্দিন বলেন রোকিয়া আমাদের গর্ব,আমাদের অহংকার।মিডিয়া জগতের অনুপ্রেরণা। আমাদের উ”িত তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা।




সারাদেশ - এর আরো খবর