চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে শ্রীলংকা। শতাব্দীর ইতিহাসে রেকর্ড সর্বনিম্ন রিজার্ভ নেমে এসেছে দেশটিতে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ভারতের দ্বারস্থ্ হওয়ায় সম্পর্কের অবনতি ঘটছে চীনের সঙ্গে। এরইমধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে দেশটি।
সূত্রমতে, সার আমদানি নিয়ে শুরু। এরপর তা গড়িয়েছে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প পর্যন্ত। অনেকটা আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিতভাবেই চীনের সঙ্গে মনকষাকষি শুরু হয় শ্রীলংকার। খাদ্য ও ওষুধসহ অপরিহার্য দ্রব্যের আমদানি এক মাস চালানোর মতোও অর্থ নেই দেশটির হাতে। এ অবস্থায় ভারতের দ্বারস্থ হয় কলম্বো। তাতে সাড়া দিয়ে শ্রীলংকার সঙ্গে এ নিয়ে কয়েকটি চুক্তিও করেছে ভারত। তবে পরিস্থিতি তাতে আরো ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। এরইমধ্যে নানা উপায়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে চীনও।
জানা গেছে, শ্রীলংকার অর্থনীতি আর কখনই এতটা দুর্দশায় পড়েনি। পৌনে এক শতাব্দীর ইতিহাসে রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে এসেছে দেশটির রিজার্ভ। শ্রীলংকার পার্লামেন্টে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুতে দেশটির হাতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১২০ কোটি ডলার। এ দিয়ে অপরিহার্য দ্রব্যের আমদানি এক মাসও চালানো সম্ভব না। উপরন্তু শিগগিরই বড় দুটি দেনার অর্থ পরিশোধের সময়ও এগিয়ে আসছে।
অতীতে এ ধরনের সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে শ্রীলংকা সাধারণত চীনের দ্বারস্থ হয়েছে। চীনের কাছে শ্রীলংকার দেনা এরই মধ্যে ৫০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। দেশটি থেকে ঋণ গ্রহণের আরো সুযোগ ছিল কলম্বোর। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে মতদ্বৈধতার শুরু সার আমদানি নিয়ে। চীন থেকে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের অর্গানিক সার আমদানিতে চুক্তি করেছিল শ্রীলংকা। কিন্তু এ আমদানীকৃত সারে ক্ষতিকর প্যাথোজেনের উপস্থিতির কারণ দেখিয়ে চুক্তিটি বাতিল করেছে কলম্বো। বর্তমানে এ-সংক্রান্ত আমদানি বিরোধের বিষয়টি সিঙ্গাপুর ও কলম্বোয় নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ বিরোধ চলাকালেই আবার ভারত থেকে তরল নাইট্রোজেন সার আমদানির উদ্যোগ নেয় শ্রীলংকা। বিষয়টি চীনকে আরো ক্ষিপ্ত করে তোলে। অন্যদিকে শ্রীলংকার উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি দ্বীপে হাইব্রিড সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল চীনের সিনো সোলার হাইব্রিড টেকনোলজির। সম্প্রতি লংকান সরকারের কয়েক কর্তাব্যক্তির বক্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বিষয়টি নিয়ে বিকল্প চিন্তাভাবনা করছে কলম্বো। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলংকা নিয়ে চীনের বিরক্তি রূপ নেয় বিরূপ মনোভাবে।