জন্ম থেকে শুরু করে এতদিন লেখাপড়া সহ প্রায় সব কিছুই চলছিল একসাথে। দুইজনই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সমান তালে। একসঙ্গে দুইজন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগও পেয়েছেন। তবে দুজনকে ভর্তি হতে হবে আলাদা দুটি মেডিকেল কলেজে। এরমধ্য দিয়ে দুজনের অনেকটা আলাদা জীবন শুরু হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দীন ও নাজমুন নাহার দম্পতির যমজ সন্তান ফাহমিদা তাজিন ও মাহমুদা তারিনের বেড়ে ওঠা একইসাথে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সব ক্ষেত্রে দুজনের ফলাফলও একই। সর্বশেষ দুইজনই মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবেফাহমিদা তাজিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এবং মাহমুদা তারিন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন। কন্যাদের এ সাফল্যে পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বয়ে চলেছে। অন্যদিকে বোনদের সাফল্যে আনন্দিত বড় বোন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সম্মান (হিসাববিজ্ঞান) প্রথম বর্ষের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ও একমাত্র ভাই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ আয়মান।
শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ফাহমিদা ও মাহমুদা এর আগে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে তাঁরা দুজনে শহরের ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেছেন।
ধারাবাহিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দুই বোন মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করায় অভিন্ন ভাষায় বলেন, প্রথমত মানবিক মানুষ হতে চান। চিকিৎসকদের নিয়ে যত নেতিবাচক ধারণা মানুষের মনে আছে, সে ধারণা কাটিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান।
সন্তানদের সাফল্যে মা নাজমুন নাহার বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। সাথে ওদের নিরলস চেষ্টা সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও বড় অবদান রয়েছে।’ বাবা মো. নাছির উদ্দীন বলেন, ‘মেয়েদের নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে চলার জন্য আমরা উৎসাহ দিয়েছি। বিশেষ করে বিলাসিতা-উচ্ছৃঙ্খলতা কখনো তাঁদের ধারেকাছে ভিড়তে পারেনি।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ফাহমিদা ও মাহমুদা মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি এই কলেজকেও সম্মানিত করেছে। তারা আলোকিত মানুষ হোক, সেটাই প্রত্যাশা। অন্য শিক্ষকরাও একইধরণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।