ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন,বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যেও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ এবং সম্পর্কের অগ্রগতি হয়েছে। একে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ভারতের সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পরে শুক্রবার তিনি ঢাকা ছাড়েন।
একদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছান জয়শঙ্কর। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এস জয়শঙ্করের এটি তৃতীয় ঢাকা সফর। এ পদে দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৯ সালে প্রথমবার ঢাকা সফরে এসেছিলেন তিনি। সর্বশেষ গত বছরের মার্চে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন।
এস জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশে আসতে পারা সবসময় আনন্দের। এক বছরের কিছুটা বেশি সময় পর আবার ঢাকায় এলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কভিড-১৯ মহামারীর এ চ্যালেঞ্জের সময়েও আমরা নিয়মিতভাবে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত থেকেছি। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সুবিধাজনক সময়ে ভারত সফর করবেন। গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন। এসব সফর সম্পর্কের মাইলফলক। নিয়মিত, অনানুষ্ঠানিক ও আন্তরিকভাবে অনুষ্ঠিত আলোচনা দুই দেশের মধ্যে প্রতিবেশী হিসেবে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্কেরই প্রতিফলন।
জয়শঙ্কর বলেন, দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব ১৮টি রাজধানীতে মৈত্রী দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ও বাপু জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাণিজ্য, বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণদান, বিনিয়োগ, ভ্রমণসেবা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। কভিডে যেটি কমে গিয়েছিল, সেটি আবারো ফেরত এসেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনেকগুলো নতুন প্রকল্প শুরু করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কভিড আমাদের শিখিয়েছে যে আঞ্চলিকভাবে সাপ্লাই চেইন ও ভ্যালু চেইন বজায় রাখা কতটুকু জরুরি।
উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি খাতে ভারত আরো বড় ধরনের সহযোগিতা চায় জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, জলবিদ্যুৎ খাতে দুই দেশের জন্য এবং আঞ্চলিকভাবে সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে আমরা বিবিআইএন কাঠামোয় কাজ করতে চাই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় চলছে। গত বছর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। দুই দেশ একসঙ্গে যেভাবে কাজ করেছে, তা ইতিহাসে অনন্য। বড় বড় সমস্যা আমরা সমাধান করেছি। যে ছোটখাটো সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানের জন্য উভয় পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করা হয়েছে।