সংক্ষিপ্ত সফর শেষে শুক্রবার ঢাকা ছেড়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সকাল সাড়ে ৮টায় কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু থেকে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে বিদায় জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় বিমান বাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় আসেন জয়শঙ্কর। কর্মসূচির শুরুতে ওইদিন বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সাক্ষাত্কালে আলোচনায় দুই দেশের প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা, কুশিয়ারা ও ফেনী নদীর পানিবণ্টন, বর্তমান কভিড পরিস্থিতি ও বিশ্ব অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উঠে আসে। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নয়াদিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানান। এছাড়া বৈঠকে দুই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় আরো জোর দেয়ার পাশাপাশি সম্পর্কের বর্তমান অবস্থান নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে এস জয়শঙ্কর এক টুইট বার্তায় জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা তাকে জানানো হয়েছে। দুই নেতার দিকনির্দেশনায় আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হচ্ছে।
এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন এস জয়শঙ্কর। আধা ঘণ্টার কম সময় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টনসহ দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো খুব দ্রুত সমাধানে জোর দেয়া হয়। এছাড়া বৈঠকে যোগাযোগ, জলবিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে শক্তিশালী উপআঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়। বৈঠক শেষে এস জয়শঙ্কর গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশে আসতে পারা সবসময় আনন্দের। এক বছরের কিছুটা বেশি সময় পর আবার ঢাকায় এলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কভিড-১৯ মহামারীর এ চ্যালেঞ্জের সময়ও আমরা নিয়মিতভাবে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত থেকেছি। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অগ্রগতি হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনেক নতুন প্রকল্প শুরু করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কভিড আমাদের শিখিয়েছে যে আঞ্চলিকভাবে সাপ্লাই চেইন ও ভ্যালু চেইন বজায় রাখা কতটুকু জরুরি।
উপআঞ্চলিক কানেক্টিভিটি খাতে ভারত আরো বড় ধরনের সহযোগিতা চায় জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, জলবিদ্যুৎ খাতে দুই দেশের জন্য এবং আঞ্চলিকভাবে সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে আমরা বিবিআইএন কাঠামোয় কাজ করতে চাই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০১৯ সালে প্রথমবার ঢাকা সফর করেন জয়শঙ্কর। সর্বশেষ গত বছরের মার্চে ঢাকা সফর করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এবারেরটি ছিল জয়শঙ্করের তৃতীয় ঢাকা সফর।