শিরোনাম
  • সাধারণ রোগী হিসেবে এনআইও-তে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত রাত জাগলে সাত ক্ষতি আইপিডিআই ফাউন্ডেশন হৃদরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে : স্পিকার মহান মে দিবস পালিত শিক্ষকরাই আগামী দিনের স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর : শিল্পমন্ত্রী শ্রমিকদের কল্যাণে বিশেষ নজর দিতে শিল্প মালিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান মহান মে দিবস আজ সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে : প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ইয়ুথ শুটিংয়ে চ্যাম্পিয়ন বিকেএসপি, রানার্সআপ রাজধানী শুটিং ক্লাব
  • বেআইনিভাবে খাস জমির বিপরিতে ৫জনকে ৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান 

    দুর্নীতির দায়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উপপ্রধান প্রমথ রঞ্জন ঘটকের পদাবনতি

    নিজস্ব প্রতিবেদক

    ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০১:০৭ অপরাহ্ন

    দুর্নীতির দায়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উপপ্রধান প্রমথ রঞ্জন ঘটকের পদাবনতি

    মাদারীপুর ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের জন্য সরকারি খাস জমির বিপরীতে বেআইনিভাবে ৫ জনকে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৭৪৫ টাকার চেক প্রদানের দায়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ঢাকার উপপ্রধান প্রমথ রঞ্জন ঘটককে (পরিচিতি নং-১৭৫১১)  তিন বছরের জন্য অবনমিতকরণ শীর্ষক গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।


    সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) (ক) বিধি অনুযায়ী তাকে তিন বছরের জন্য নিম্ন পদে অবনমিতকরণ" অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী কমিশনার/সিনিয়র সহকারী সচিবের নিম্নপদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব পদে বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা মূল বেতনে তিন বছরের জন্য অবনমিতকরণ শীর্ষক গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। মেয়াদকাল সমাপ্তিতে তিনি পূর্বের পদে বহাল হবেন; ভবিষ্যতে তিনি এর জন্য কোনো বকেয়া সুবিধা প্রাপ্য হবেন না এবং পদাবনতি বলবৎ থাকার সময় বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতির জন্য গণনাযোগ্য হবে না।
    রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত গত ৪ এপ্রিলের এক প্রজ্ঞাপনে এ দন্ডের কথা জানানো হয়।


    প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,  প্রমথ রঞ্জন ঘটক, উপপ্রধান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, ঢাকা এবং প্রাক্তন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মাদারীপুর বিগত ২৮-০৬-২০২০ হতে ৩০-০৬-২০২১ তারিখ পর্যন্ত মাদারীপুরের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত ছিলেন এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ০৬/২০১৭-২০১৮ নম্বর এল.এ. কেসে শিবচর উপজেলার ৫ টি চেক প্রদান করেছেন যা সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি:


    চেক গ্রহীতারা হলেন-মতি শেখ, পিতা মৃত কাদের শেখ এক কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৮৯১ টাকা; মোঃ রাজ্জাক মোল্লা, পিতা মৃত ইশদালী মোল্লা- এক কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৮৯১ টাকা; আঃ হাকিম শেখ, পিতা মৃত কাদির শেখ- এক কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৮৯১ টাকা; রমিজন্দিন হাওলাদার, পিতা মৃত হামিদ হাওলাদার- এক কোটি ৫৮ লাখ ৫৩ হাজার ১০৪ টাকা এবং  মোঃ সাওন, পিতা আব্দুল বারেক টিপু-৩৬ লাখ ২ হাজার৯৬৮টাকা।


    প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- মাগুরখন্ড, শাহবাজনগর, চরচান্দা মৌজাসহ অন্যান্য মৌজার বন্দোবস্তকৃত খাসজমির ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান না করার জন্য জেলা প্রশাসকের মৌখিক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তিনি নির্দেশনা অমান্য করে ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনসংগত আদেশ অমান্য করেছেন। ইস্যুকৃত চেকসমূহের ক্ষমতাপত্র সম্পাদন ১১-০৭-২০২১ তারিখে হলেও তিনি পেছনের তারিখ ৩০-০৬-২০২১ তথা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মাদারীপুর হতে তার অবমুক্তির তারিখ উল্লেখপূর্বক চেকে স্বাক্ষর করেছেন। ক্ষতিপূরণের পাঁচটি নথিতে ক্ষমতা অর্পণ ও ক্ষতিপুরণ প্রাপ্তির আবেদনে স্বাক্ষরের গরমিল থাকা সত্ত্বেও বিধি মোতাবেক সঠিকভাবে কাগজপত্র যাচাই না করে তিনি অবৈধ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানের জমির বিপরীতে ক্ষতিপূরণের চেকে স্বাক্ষর করেছেন। 
    গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নামে এওয়ার্ড থাকা সত্ত্বেও এওয়ার্ড সংশোধন না করে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে তিনি সরকারের জমির বিপরীতে ব্যক্তির নামে ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান করেছেন। এরূপে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন-২০১৭ এর নির্দেশনা অমান্য করে ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান করে আইনসংগত কারণ ব্যতিরেকে সরকারের আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশ অবজ্ঞা করেছেন। মাগুরখন্ড মৌজার কোন বিল দেওয়া যাবে না তা জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতাপত্রের মাধ্যমে সরকারি কোষাগার হতে অবৈধভাবে ৭ কোটি ৩৫ লক্ষ ৭ শত ৪৫ টাকার বিল উত্তোলনে সহযোগিতা করেছেন। উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে ০৪/০৮/২০২১ তারিখের ০৪,০০,০০০০.৫১১.২৭.০১৯.১৯-৪৭৫ নং স্মারকের মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়। সে অনুযায়ী প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) ও ৩(ঘ) মোতাবেক "অসদাচরণ" ও দুর্নীতি পরায়ণতা" এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রণয়নপূর্বক তার নিকট প্রেরণ করা হয়; এবং


    যেহেতু, প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১) অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রাপ্ত হয়ে জবাব দাখিলের জন্য সময় বর্ধিতকরণের আবেদন করেন। তার সময় বর্ধিতকরণের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। তিনি লিখিত জবাব দাখিল করেন এবং ব্যক্তিগত শুনানির জন্য ইচ্ছা পোষণ করেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১/১১/২০২১ তারিখে ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যক্তিগত শুনানিঅন্তে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৭(২)(ঘ) অনুযায়ী ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়। তদন্ত বোর্ড তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলে তদন্ত বোর্ডের দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে কিছু অসংগতি থাকায় একই তদন্ত বোর্ডকে পুনঃতদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয়। তদন্ত বোর্ড পুনঃতদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলে দাখিলকৃত পুনঃতদন্ত প্রতিবেদনে প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-এর বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় আনীত অভিযোগ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন মতামত না থাকায় সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয়। তদন্তবোর্ড সুস্পষ্ট মতামতসহ দাখিলকৃত পুন:তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত অংশে উল্লেখ করেন যে, অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) মোতাবেক "অসদাচরণ"-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং পেছনের তারিখ উল্লেখপূর্বক চেক স্বাক্ষর করার বিষয়টি অসৎ উদ্দেশ্যে (রষষ সড়ঃরাব) করা হয়েছে মর্মে প্রমাণিত হয়েছে-যা দুর্নীতিপরায়নতার শামিল; এবং


    যেহেতু, জনাব প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-এর বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলা এবং আইন সংগত কারণ ব্যতিরেকে সরকারের আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশ অবজ্ঞাকরণের কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী "অসদাচরণ" এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৭(৯) বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চাকরি হতে বরখাস্তকরণ বা অন্য যথোপযুক্ত গুরুদন্ড প্রদান করা হবে না সে মর্মে দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ অভিযুক্ত কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়। দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ প্রাপ্ত হয়ে তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দাখিল করেন; এবং


    যেহেতু, অভিযুক্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে অসদাচরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) (ক) বিধি মোতাবেক "০৩ (তিন) বছরের জন্য নিম্ন পদে অবনমিতকরণ" অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী কমিশনার/সিনিয়র সহকারী সচিবের নিম্নপদ সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব পদে বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেডে ২২০০০/- টাকা মূল বেতনে ৩ বছরের জন্য অবনমিতকরণ শীর্ষক গুরুদন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৭(১০) বিধি এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পরামর্শ) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯ এর ৬নং প্রবিধান মোতাবেক উক্ত গুরুদন্ড আরোপের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সাথে সহমত পোষণ করে; এবং


    যেহেতু, প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১), উপপ্রধান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, ঢাকা এবং প্রাক্তন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মাদারীপুর-এর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ এর দ্বিতীয় অধ্যায়ের রুল-৭ এবং শিডিউল-৪ এর ক্রমিক ১৫ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিধায় একই শিডিউলের ক্রমিক ১৭ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান এর অনুচ্ছেদ ১৩৫(১) অনুযায়ী এ বিভাগীয় মামলায় প্রমথ রঞ্জন ঘটক (১৭৫১১)-কে গুরুদন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৬) বিধি মোতাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি সানুগ্রহ অনুমোদন/সম্মতি প্রদান করেন।


     




    সাতদিনের সেরা খবর

    জাতীয় - এর আরো খবর

    মহান মে দিবস পালিত

    মহান মে দিবস পালিত

    ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০১:০৭ অপরাহ্ন