জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে। গত বছরের ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারিকে এই চিঠি পাঠান তারা। তবে জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকে এই চিঠির আনুষ্ঠানিক কোনো উত্তর দেয়া হয়নি।
চিঠিতে সই করেছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান ফেডারেশেন এগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিসাপিয়ারেন্সেস (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস আন্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ক্যাপিটল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, সিভিকাস : ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং দ্য অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন এগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি)।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা, ১২টি নিম্নস্বাক্ষরকারী সংস্থা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানাচ্ছি যে জাতিসঙ্ঘের ২০১২ সালের পলিসি অন হিউম্যান রাইটস স্ক্রিনিং অব ইউনাটেড ন্যাশন পারসোনেল বাংলাদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না।’
ডিসেম্বরে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বাংলাদেশের পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান মোট ছয়জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে র্যাব কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ‘বিষয়টি সম্পর্কে এখনো জানেন না’ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, এ চিঠিটি দুই মাস আগে ২০২১ সালের নভেম্বরের আট তারিখে পাঠানো হয়েছিল, যা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। তবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কর্মসূচি থেকে এখনো ওই চিঠির ব্যাপারে কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সামনের সারিতে রয়েছে। দুই হাজার বিশ সালে বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ, বিভিন্ন বাহিনী থেকে এ সময় ৬ হাজার ৭৩১ জন সদস্য পাঠানো হয়।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়ার কাছে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, র্যাবে কাজ করেছেন এমন সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে শান্তিরক্ষা কর্মসূচি থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস রয়েছে এমন পুলিশ ও সামরিক বাহিনী সদস্যদের শান্তিরক্ষী মিশনে নেয়া বন্ধ করার ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে এবং যারা কাজ করছেন তাদের নিরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, র্যাবের বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।