করোনার নতুন ধরণ ‘ওমিক্রন’ সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য সব দেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক তাকেসি কাসাই বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমরা যে খবর পাচ্ছি, প্রকৃত চিত্র তার থেকেও ব্যাপক- ভৌগলিকভাবে তা ইতোমধ্যেই অনেক বেশি ছড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে যেসব শিক্ষা আমরা পেয়েছি নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় তা কাজে লাগাতে হবে।
ডাব্লিউএইচও আরও জানা, ভ্রমণের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কোন দেশ এই ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ শুধু বিলম্বিত করতে পারবে, কিন্তু তা একেবারে ঠেকাতে পারবে না।
সংস্থার আপদকালীন আঞ্চলিক ডিরেক্টার ড. বাবাতুন্ডে ওলউকুরে বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের গতিপ্রকৃতি বুঝতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশাল সংখ্যক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে বর্তমানে এক যোগে কাজ করছে। তবে এখনও পর্যন্ত তারা এমন কোন তথ্য পায়নি, যার জন্য এই মহামারি মোকাবেলায় এই মুহূর্তে নতুন দিক নির্দেশনার প্রয়োজন রয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, প্রতিটি দেশ যেন তাদের নিজস্ব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান পদক্ষেপগুলো জোরদার করে, যেমন: মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সংক্রমিতদের ট্রেস করা, আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা এবং টিকাদান অব্যাহত রাখা।
ড.কাসাই স্কুল খোলা রাখার ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার ওপরও জোর দিয়েছেন।
গত সপ্তহে ওমিক্রনকে "উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট" ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
নজিরবিহীন সংক্রমণ দক্ষিণ আফ্রিকায়: দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, সে দেশে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নজিরবিহীন মাত্রায় বাড়ছে। মাত্র দু সপ্তাহ আগে যেখানে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ছিল গড়ে তিনশয়ের সামান্য বেশি, সেখানে এখন প্রতিদিনি নতুন কোভিড শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে এগারো হাজারের বেশি।
জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, মহামারির এই চতুর্থ ঢেউ আগের তুলনায় মারাত্মক রূপ নিয়েছে। নজিরবিহীন মাত্রায় সংক্রমণ বাড়ছে, তবে অমিক্রন আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় বেশি প্রাণঘাতী এমন প্রমাণ তারা এখনও পাননি বলে জানাচ্ছেন।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী, জো ফাহলা জন সাধারণকে টিকা নেবার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন এর কারণ কী তা তারা গবেষণা করে দেখছেন।
বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞানীরা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা চালাচ্ছেন। ওমিক্রনে ব্যথা-বেদনার মতো মৃদু কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তবে স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি চলে যাবার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। তবে, বিজ্ঞানীরা এখুনি এ ব্যাপারে নিশ্চিত মতামত দিতে চাইছেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হল, ওমিক্রনের উপসর্গগুলো কোভিড-১৯ এর অন্যান্য ধরণের উপসর্গ থেকে খুব বেশি আলাদা কিনা তার তথ্যপ্রমাণ বিজ্ঞানীরা এখনও পাননি। তাই নতুন করে কাশি, জ্বর এবং স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়াকেই এখনও করোনা আক্রান্ত হবার প্রধান তিনটি উপসর্গ হিসাবে গণ্য করছেন তারা।