শিরোনাম
  • অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগে রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত ইইউ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার করা হচ্ছে: রিজওয়ানা হাসান তরুণদের পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা সংবিধান সময়োপযোগী করার পরামর্শ ড. কামাল হোসেনের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার যেসব পরিবর্তন প্রয়োজন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ স্পিকারের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালন করবেন আইন উপদেষ্টা ৭ নভেম্বরের সরকারি ছুটি পুনর্বহালের দাবি বিএনপি’র সাবিনাদের হাতে এক কোটি টাকার চেক তুলে দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা
  • গৃহপরিচারিকা বেবি হালদার এখন নামি লেখিকা

    জাগো কণ্ঠ ডেস্ক

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    গৃহপরিচারিকা বেবি হালদার এখন নামি লেখিকা

    বিয়ের পরে স্বামীর অত্যাচারে কার্যত বাধ্য হয়ে দিল্লিতে এসে  বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন৷ শেষ পর্যন্ত কাজ পেলেন মুন্সী প্রেমচন্দের নাতি অধ্যাপক প্রবোধ কুমারের বাড়িতে৷ মেয়েটি মাঝেই মাঝেই তাক থেকে পেড়ে আনতো বই। কিছুক্ষণ বইয়ের পাতার ওপর চোখ বুলিয়ে আবার রেখে দিতো যথাস্থানে। এই ঘটনা চোখ এড়ায়নি গৃহকর্তার৷ প্রবোধ কুমার তাকে একটা ডায়েরি আর পেন দিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিন ভারত বেড়াতে যাবার সময়, বলেছিলেন লিখতে। মেয়ে তো হতবাক......কী নিয়ে লিখবেন তিনি! সেই মেয়ের বই বেস্ট সেলার হয়েছে,"আলো আঁধারি।" অনুবাদ হয়েছে ইংরেজি ভাষায়৷

    কাশ্মীর উপত্যকায় ১৯৭৩ এ জন্ম এই বাঙালি কন্যার। মদ্যপ সেনাকর্মী বাবার নিত্য অত্যাচারে চার বছর বয়সে মা তাদের দুই বোনকে নিয়ে চলে আসে মামার বাড়ি মুর্শিদাবাদ। আবারও বিয়ে করে মা, বড় হতে থাকে সৎ বাবার সংসারে। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আচমকাই শেষ হয়ে যায় তার মেয়েবেলা।

    একটা বাচ্চা মেয়ের যখন ফ্রক পরে খেলাধুলো করার কথা, তখন তাকে বসিয়ে দেওয়া হয় বিয়ের পিঁড়িতে। শেষ হয়ে যায় তার "শৈশব,” খেলার মাঝখান থেকে তাকে উঠিয়ে এনে মণ্ডপে একটা লোকের পাশে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিছুই বুঝতে পারছিল না মেয়েটা, ভেবেছিল বোধহয় কোনো পুজো হচ্ছে। তারপর তাকে বলা হল যে ওই লোকটার সঙ্গে চলে যেতে হবে। তখন মেয়েটার মাত্র ১২ বছর বয়স, স্বামীর ২৬।

    বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। পতি দেবতাটির ধারণা বউয়ের তো দুটোই কাজ, সন্তান ধারণ আর রান্না করা। কুড়ি বছর বয়সের মধ্যে মেয়েটি তিন সন্তানের জন্ম দিলো। তখনই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সন্তানদের জীবন তার জীবনের মত হবে না। ১৯৯৯ সালে, ২৫ বছর বয়সী তরুণী মা তার তিন সন্তানকে নিয়ে দিল্লীগামী একটি ট্রেনে উঠে বসেন। ‌

    দিল্লিতে এসে সে বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে শুরু করলো। একে অল্প বয়স তার ওপরে কোন গার্জেন নেই, কাজের জায়গায থেকেই নানা কুপ্রস্তাব আসতে লাগলো । নানা বাড়ি ঘুরে শেষ অব্দি কাজ পেলো প্রবোধ কুমারের বাড়িতে । অধ্যাপক কুমার ছিলেন মুন্সী প্রেমচন্দের নাতি।

    বইয়ের তাক ঝাড়পোঁছ করতে গিয়ে মেয়েটি মাঝেই মাঝেই তাক থেকে পেড়ে আনতো বই। কিছুক্ষণ বইয়ের পাতার ওপর চোখ বুলিয়ে আবার রেখে দিতো যথাস্থানে। এই ঘটনা চোখ এড়ায়নি গৃহকর্তার যাকে সে তাতুস বলে ডাকতো । শব্দটির অর্থ বাবা, তিনিই তাকে এ নামে ডাকতে বলেছিলেন । একদিন তিনি বেবীর হাতে তুলে দেন তসলিমার লেখা আমার মেয়েবেলা।
    “বইটা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছিল। মনে হয়েছিল, যেন আমার কথাই এখানে লেখা আছে,” বলছিলো কাজের মেয়েটা ।

    এর কিছুদিন পর, দক্ষিণ ভারত ভ্রমণে যাওয়ার আগে, নিজের ড্রয়ার থেকে প্রবোধ কুমার তাকে একটা ডায়েরি আর পেন দিয়ে যান। বলেন লিখতে । মেয়ে তো হতবাক......কী নিয়ে লিখবেন তিনি!

    লিখলেন তাঁর হারানো শৈশবের কথা, লিখলেন তাঁর প্রথম সঙ্গমের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা, লিখলেন তেরো বছর বয়সের প্রসব যন্ত্রণার কথা, লিখলেন বছরের পর বছর ধরে নির্যাতনের ফলে শরীরে ফুটে ওঠা ক্ষতের কথা। লিখতে লিখতে ফিরে এল (বোনের) স্বামীর বোনের গলা টিপে ধরার অবদমিত স্মৃতি।

    প্রায় কুড়ি বছর পর লিখছিলেন, প্রথম দিকে বানান, ব্যাকরণ নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু একটু একটু করে পুরনো অভ্যাস মনে পড়ে গেল। আরো লিখতে থাকলেন। পরে বলছেন, “যত লিখতাম, ততই ভালো লাগত। মনে হত যেন অনেক দিনের কোনো ভার আমার বুকের ওপর থেকে সরে যাচ্ছে।” প্রবোধ কুমার ফিরে এসে দেখলেন, একশো পাতার ওপর লেখা হয়ে গেছে!

    এটাই বেবী_হালদারের প্রথম বই – "আলো আঁধারি।" প্রথম বার পড়ে কেঁদে ফেলেছিলেন প্রবোধ। যে সমস্ত সাহিত্য-অনুরাগীদের লেখাটি দেখিয়েছিলেন তিনি, তাঁরা অনেকে অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন লেখাটির।
    বহু প্রকাশক নাকচ করে দেওয়ার পর, শেষ অব্দি কলকাতার একটা ছোট প্রকাশনী – রোশনি পাবলিশার্স – বইটি ছাপতে রাজি হয়।‌

    “একদিন একটা বই দেখিয়ে তাতুস আমাকে বললেন, ‘এটা তোমার বই। তুমি এটা লিখেছ।’ ছাপা বই আমার সামনে হাজির! আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না!”

    ঝাড়ুদার থেকে পরিচারিকা,পাশের বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা থেকে আধুনিকা কলেজ পড়ুয়া – বেবীর কাহিনি নাড়া দিয়েছিল সকলকেই। বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন ঊর্বশী বুটালিয়া। ২০০৬ সালে বইটি বেস্ট সেলার তালিকায় ছিল। একুশটি আঞ্চলিক এবং তেরটি বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে বইটি ! ‌

    আরো দুটি বই লিখেছেন বেবী। লেখা তাঁকে দিয়েছে আত্মপরিচয়, যা আগে ছিলই না।

    অর্থনৈতিক ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মত অবস্থায় পৌঁছে বেবী তাঁর তিন সন্তানকে (সুবোধ, তাপস, পিয়া) নিয়ে কলকাতায় থাকতে আরম্ভ করেন।

    “এখন আমি বিশ্বাস করি, মানুষ সব পারে। আগে আমি পরিচারিকা ছিলাম। এখন আমি লেখিকা। আমি সবাইকে এটাই বলি যে, শুরু যে কোনো সময়েই করা যায়।” ‌

     

    (ফেসবুক থেকে নেয়া)




    ভিন্ন খবর - এর আরো খবর

    বিল গেটসের নতুন প্রেমিকা কে এই পওলা হার্ড? 

    বিল গেটসের নতুন প্রেমিকা কে এই পওলা হার্ড? 

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের এ কি হাল?

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের এ কি হাল?

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    ক্রাশ না ক্রাচ

    ক্রাশ না ক্রাচ

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    গৃহপরিচারিকা বেবি হালদার এখন নামি লেখিকা

    গৃহপরিচারিকা বেবি হালদার এখন নামি লেখিকা

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    বাঁচার আকুতি কত হৃদয়বিদারক !

    বাঁচার আকুতি কত হৃদয়বিদারক !

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে এক গাছেই ৫০ মৌচাক

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে এক গাছেই ৫০ মৌচাক

    ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:১৭ পূর্বাহ্ন