সউদি আরবে অবস্হানরত হাব সদস্য ও মোনাজ্জেমগণের হজ পরবর্তী মতবিনিময় ও মুল্যায়ন সভা এবং নৈশ ভোজ শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাব সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় ধর্মমন্ত্রী জনাব ফরিদুল হক খান এমপি প্রধান অতিথি ও ধর্মসচিব জনাব মু আ হামিদ জমাদ্দার বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন। ধর্মমন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মতিউল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ফজলুর রহমান, কাউন্সেলর হজ জহিরুল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মনজুরুল হক, মাননীয় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সাদিকুর রহামন( উপসচিব) কনসাল হজ আসলাম উদ্দিনসহ ধর্মমন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাগণ উপস্হিত ছিলেন। হাব এর সিনিয়র সহসভাপতি মাওলনা ইয়াকুব শরাফতী সভা পরিচালনা করেন। হাব মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার, নির্বাহী কমিটির মাওলানা ফজলুর রহমান, আব্দুল মালেক, মুফতি আব্দুল কাদের, মুফতি জুনায়েদ গুলজার, মোসলেহ উদ্দিন আলমগীর, মাওলানা জাহিদ আলম সহ অন্যান্যরা উপস্হিত ছিলেন।
হাব সভাপতি সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এবছর মোনাজ্জেম ভিসা না পেয়েও প্রতিকূল পরিবেশে হজ কার্যক্রম সম্পন্ন করা একটি চ্যালেন্জ ছিল বলে উল্লেখ করেন। তবে মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং এজেন্সী সমূহের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাড়ী ভাড়া সহ সকল কাজ সম্পন্ন করে প্রায় সকল নিবন্ধিত হজযাত্রীদেরকে সউদি আরবে নিয়ে আসার কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে এজ্ন্সী মালিকদেরকে ধন্যবাদ জানান। হাব সভাপতি সকল এজেন্সীর উদ্দেশ্যে বলেন, হাব অন্যান্য বানিজ্য সংগঠনের মত নয়। অন্যান্য বানিজ্য সংগঠনের ন্যায় শুধুমাত্র সদস্যদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় হাব সভাপতির নিকট প্রথম প্রায়োরিটি নয়। বরং আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীগণের ন্যায্য প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা হাব এর প্রথম ও প্রধান কাজ। হজযাত্রীর অধিকার নিশ্চিত করেই/ হলেই সদস্যদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে কথা বলবে হাব। প্যাকেজ অনুসারে হজযাত্রীদের হোটেলের দুরত্ব ও মান এবং সেবা নিশ্চিত করতে হবে মর্মে সকল হজ এজ্ন্সীকে সতর্ক করেন। হাব সভাপতি সম্মানিত হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ করেন, প্যাকেজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে বুঝে এজেন্সীর সাথে লিখিত চুক্তি করতে, এজেন্সীর ব্যাংকে হিসাবে টাকা জমা দিয়ে মানি রশিদ সংরক্ষন করতে এবং মধসত্বভোগীদের সহায়তা না নিতে।
প্রধান অতিথির বক্তবে ধর্মমন্ত্রী জনাব ফরিদুল হক খান বলেন, হজযাত্রীদের সেবার ক্ষেত্রে এজেন্সীর কমিটমেন্ট যেন ঠিক থাকে এবং ভিসা করা নিয়ে এবছর যে সকল সমস্যা হয়েছিল তা যেন ভবিষ্যতে না হয়। আগামী বছর যেন যথা সময়ে ভিসার কাজ শেষ করতে পারেন সে বিষয়ে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে তিনি হজ এজেন্সী মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। প্যাকেজ অনুসারে সেবা নিশ্চিত করতে বলেন এবং যারা তা করবে না তাদেরকে শাস্তির আওতায় আমার কথা বলেন। এবছর সফল হজ ব্যবস্হাপনায় হাব এর সহযোগিতার জন্য হাব সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্মসচিব জনাব মু আ হামিদ জমাদ্দার বলেন, এবছর কয়েকটি ব্যাংক হজ ব্যবস্হাপনার সংকট তৈরী করেছিল। এসকল ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে আগামীতে যেন হজ ব্যবস্হাপনা শংকটে পতিত না হয় সেবিষয়ে কাজ করবে মন্ত্রনালয়। তিনি বলেন বেশিরভাগ হজ এজেন্সী ভালো কাজ করে, সামান্য ২/৪ টি এজেন্সীর কারনে হজ ব্যবস্হাপনা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং হাজিদের কষ্ট হয়। তাদের বিরোদ্ধে কঠিন ভূমিকা নেবে মন্ত্রনালয়। তিনি বলেন, হাব সব সময় হজ ব্যবস্হাপনায় সরকার ও মন্ত্রনালয়কে আন্তরিক সহযোগিতা করে। হাব সভাপতি কখনো কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না বা কোন অন্যায়ের পক্ষে তদবির করেন না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম, কাউন্সেলর হজ জহুরুল ইসলাম ও যুগ্মসচিব ড. মন্জুরুল হক হজ বব্যস্হাপনা ও করনীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সমাপনি বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। হজের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যতিক্রম আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার কারনেই হজ ব্যবস্হাপনা আধুনিক ও উন্নত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং হজযাত্রীদের সউদি আরবের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্ন হচ্ছে। হজকার্যক্রমে সার্বক্ষনিক তৎপর থাকার জন্য হাব সভাপতি ধর্মমন্ত্রী মহোদয়কে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। ধর্মসচিব জনাব মু আ হামিদ জমাদ্দারকে হাব এর পক্ষ থেকে বিশেষ ধন্যবাদ জানানো হয় এবং ধর্মমন্ত্রনালয়ের সকল কর্মকর্তা ও মক্কাস্হ কাউন্সেলর হজ ও কনসাল হজকে হাব এর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। রাজকীয় সউদি বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্স, সউদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী, ভাইস মিনিস্টার, উপমন্ত্রী, বাংলাদেশে সউদি আরবের মান্যবর রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউছুফ ঈসা আল দুহাইলান এর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হাব সভাপতি।