বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নার্স নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সম্প্রতি ১০৯ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে ৫৬১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের যোগদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিবন্ধনধারী ডিপ্লোমা বা বিএসসি নার্স নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও স্বল্পসংখ্যক ইন্টার্ন নার্সও নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ১০৯ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগে আবেদনপত্র আহ্বান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অথবা বিএসসি ইন নার্সিং ডিগ্রিপ্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীদের অবশ্যই বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে।
৩ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও নোটিশ বোর্ডে ফল প্রকাশ করা হয়। ১২ হাজার ৬৯০ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। উত্তীর্ণ হন ২ হাজার ৯৭ জন। ভাইভা হয় ২০ ডিসেম্বর।
চলতি মাসের ১ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৮৫তম সভার অনুমোদনক্রমে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে নির্দিষ্ট শর্তে ৫৬১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হলো।
ঢাকা নার্সিং কলেজের দুই ইন্টার্ন শিক্ষার্থী জানান, ৫ জনকে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা তাদেরই ব্যাচের। আগামী মার্চে তাদের নিবন্ধন পরীক্ষা হওয়ার কথা। অর্থাৎ, নিবন্ধিত না হয়েও তাদের ব্যাচের ৫ জন ইন্টার্ন নার্স নিয়োগ পেয়েছেন। একই ব্যাচের আরও কয়েকজন পরীক্ষা দিয়েছিলেন, নিবন্ধন না থাকার কারণে তাদের অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে নিয়োগসংক্রান্ত কমিটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার বলেন, ১০৯ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, এ কথা ঠিক। তবে একই সময়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থাকায় পাঁচ শতাধিক নার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে সরকারি চাকরিতে চলে যান। এতে হাসপাতালে নার্সের সংকট দেখা দেয়।
বিষয়টি মাথায় রেখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ১২ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়, বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও পদসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষমতা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে। পরে সিন্ডিকেট সভায় ৫৬১ জনের নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনি কোনো সমস্যা নেই।
ইন্টার্ন নার্সরা কীভাবে নিয়োগ পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো তথ্য তার জানা নেই। কারণ ভাইভা পরীক্ষায় প্রত্যেকের কাগজপত্র যাচাই করে নেওয়া হয়েছে।