১৫ দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) অফিসার অ্যাসোসিয়েশন। দাবির মধ্যে রয়েছে-উপাচার্য হাফিজা খাতুনের স্বেচ্ছাচারিতা, গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা তহবিলের টাকা ভাগ বাটোয়ারা, কাজ ছাড়াই উন্নয়ন প্রকল্পের কোটি কোটি বিল প্রদানের তদন্ত করা ইত্যাদি। গত ৮ জুন থেকে এ কর্মবিরতি চলছে।
সোমবার দেখা যায়, কর্মকর্তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরের করিডোর দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে এবং স্লোগান দিচ্ছে।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, অর্থ ও হিসাব শাখার কর্মকর্তা শাহান শাহর পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে। প্রহসনমূলক তদন্তের নামে বছরের পর বছর হয়রানি, আক্রোশমূলকভাবে উপরেজিস্ট্রার রেজাউল হকের বেতন-ভাতা মাসের পর বন্ধ রাখা হয়েছে। বিজন ব্রহ্ম, কামরুল হাসান শামসাদ ফখরুলসহ কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে নিয়ে ভিসি একটি সিন্ডিকেট বানিয়ে সাধারণ কর্মকর্তাদের হয়রানি করছেন।
তারা আরও জানান, এসব বিষয় সুরাহার জন্য বারবার উপাচার্য হাফিজা খাতুন ও রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি দিলেও তাতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ২১ মে ১৫ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি দেওয়া হলে ২৮ জুনের মধ্যে তা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এরপর উপাচার্য অফিসারদের ডেকে ধমক দেন এবং কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বলেন। রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষরে নামমাত্র দুটি কমিটি গঠন করা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
জানা গেছে, কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ছাত্রদের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেলেও অফিস চালু থাকার কথা ছিল কিন্তু কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে সবকিছু বন্ধ রয়েছে।
কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নিতে চাই। কিন্তু কতিপয় অসৎ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছেন। সাধারণ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি আটকে রাখা, বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার এসবের প্রতিকারে বারবার স্মারকলিপি দিলেও উপাচার্য তাতে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় আমরা কর্মবিরতি পালন করছি।’
কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনার রশিদ ডন বলেন, একজন অযোগ্য ভিসি কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে দালালচক্র মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলব।
এ বিষয়ে উপাচার্য হাফিজা খাতুন বলেন, তাদের সঙ্গে আমি একাধিকবার বসেছি। দুটি কমিটি করে দিয়েছি। কিছু আইন-কানুনের ব্যাপার আছে, যা দাবি করলেই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।