শিরোনাম
  • সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী চক্রান্ত চালাচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া উচিত : ডা. শফিকুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারে কোনো আলাপ হয়নি : রিজওয়ানা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেঁষে শাহবাগ থানার নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার একনেকে ৫ হাজার ৯১৫.৯৯ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন কোন পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না : তারেক রহমান বাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ড. ইউনূস কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ৩২৩ কেজি বর্জ্য অপসারণ রাজবাড়ীতে গড়াই নদীর খেয়াঘাটের ইজারাদারকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
  • প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশংকা বিশেষজ্ঞদের

    ঝিকরগাছার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না

    বেনাপোল প্রতিনিধি

    ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৪৯ অপরাহ্ন

    ঝিকরগাছার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না

    উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যশোরের ঝিকরগাছার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে মাগুরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে দু’একটা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বালু তোলা শ্যালো মেশিন আর বালু জব্দ করা হলেও কোনোভাবেই এই বালু উত্তোলন ও বিক্রি কার্যক্রম প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিধ্বসসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞগনেরা।

    অভিযোগ উঠেছে জব্দকৃত মালামাল আর বালু টেন্ডারের মাধ্যমে একেবারে পানির দামে আবারও সেই বালু উত্তোলনকারী বা তাদের প্রতিনিধিদের নিকট বিক্রি করে দেওয়া হয়।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাগুরা, গদখালী ইউনিয়নের বারবাকপুর, সদর ইউনিয়নের হাড়িয়াদেয়াড়া, মিশ্রিদেয়াড়া গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে কপোতাক্ষ নদের মাঝখানে বড় বড় শ্যালো মেশিন বসিয়ে পাইপ দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কোথাও সেই বালু দিয়ে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে আবার কোথাও বিক্রির জন্য বালুর স্তুুপ তৈরি করে মজুদ করে রাখা হচ্ছে। সদর ইউনিয়নের হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের তেতুলতলা ও সালাফি মসজিদ সংলগ্ন দু’টি পুকুর অবৈধ ভাবে বালি তুলে ভরাট করা হয়েছে। নদ খনন কাজের দোহাই দিয়ে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের সহায়তায় ঠিকাদার বা সাব ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা বালি উত্তোলন করছে। অনেক স্থানে এ কর্মকান্ডে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত থাকার কথা শোনা যাচ্ছে।

    মাগুরা ইউনিয়নের ফুলতলা ব্রীজের নীচে কপোতাক্ষ নদ খননের কাজ পাওয়া ঠিকাদার শহীদ কপোতাক্ষ নদের মাঝে শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। বারবাকপুর, হাড়িয়াদেয়াড়া অংশে সাব ঠিকাদার আওয়ালের সাথে যোগসাজশে বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়, ডোবা ভরাট কার্যক্রম চলছে।
    এছাড়াও মিশ্রীদেয়াড়া বাজার মসজিদের নীচে দু’টি শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন অভিনব কায়দায় মসজিদের ফ্রি বালু দেওয়ার কথা বলে অবৈধ বালু উত্তোলন করছে। বালু তুলে সংরক্ষণের জন্য নদের সাথেই অবস্থিত হাতেম আলী গংদের ৬/৭ বিঘা জলাকারের একটি পুকুর আড়াই লক্ষ টাকায় ইজারা নিয়ে সেখানে বালু রাখছেন।

    কপোতাক্ষ নদ খননের কাজ পাওয়া ঠিকাদার শহীদ বলেন, আনঅফিসিয়াল ভাবে আমরা করতেছি। তা না হলে আমার বিল কম হবে, নদী খনন হবে না। নদের থেকে শ্যালো মেশিন দ্বারা বালি উত্তোলনের বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বা উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের কাছে গিছি তারা বলেছে আমরা তো অনুমোদন দিতে পারি না। তাই আমরা আনঅফিসিয়াল ভাবে করছি। তখন তার নিকট আনঅফিসিয়াল শ্যালো মেশিন বসিয়ে নদ থেকে বালি কাটা বৈধ না অবৈধ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলে অবৈধ। অবৈধ তবুও সে কাজই চালিয়ে যাচ্ছেন।

    স্থানীয় ট্রলি চালক সোহাগ বলেন, প্রতি ট্রলি বালুর জন্য জামাল মেম্বার মোট নেন ৬৫০ টাকা। যার মধ্যে সে রাখে ৩৫০ টাকা, আর আমাদের ট্রলি ভাড়া দেয় ৩০০ টাকা।

    হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের নুরুর ছেলে রহমান, সোহান, মিশ্রীদেয়াড়ার সাহেব আলী, আল আমিন, আঙ্গারপাড়ার পিন্টু, মুন্নার মাধ্যমে জামাল মেম্বার গত ৩/৪ বছর ধরে এই অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

    মাগুরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, আমি ঠিকাদারকে ৫ হাজার টাকা দিন চুক্তিতে ৪টি শ্যালো মেশিন ভাড়া দিয়েছি। ঠিকাদার (শহীদ) নিজেই বালু তুলছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। মিশ্রী দেয়াড়া বাজার জামে মসজিদের সামনের মাঠে জামাল মেম্বার নিজে বালু উত্তোলন করে রেখেছেন।

    জামাল মেম্বার আরো জানান, ৩০০ টাকা ট্রলি ভাড়া করে পাশের একটি মসজিদে ফ্রি বালু দেওয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে বালু পাওয়া গেল হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের রিপনের বাড়িতে।

    অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন সম্পর্কে বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী বাপা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান বলেন, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তলদেশে যে শুন্যতার সৃষ্টি হয় তাতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিধ্বস হওয়ার আশংকা আছে। এবং পাশের কয়েকটি গ্রামের মাটি ধ্বসে সেই শুন্যতা পুরন হবে। ফলে গ্রামের পর গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

    এ বিষয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীদেরকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, ইতিমধ্যে আমরা এই বালু উত্তোলকদের বিরুদ্ধে কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। এখন আমরা সরাসরি মামলার আশ্রয় নেবো এবং বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

    যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয় আমি অবগত না। যেহেতু জানতে পেরেছি আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

     

     




    সাতদিনের সেরা খবর

    স্পেশাল রিপোর্ট - এর আরো খবর

    দুই মেয়েকে নিয়ে এক মায়ের সংগ্রাম

    দুই মেয়েকে নিয়ে এক মায়ের সংগ্রাম

    ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৪৯ অপরাহ্ন